ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কোথায় আঘাত হানতে পারে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। গত কয়েক বছরে বঙ্গোপসাগর একের পর এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যার স্মৃতি, এমনকি সহিংসতার চিত্র এখনও মানুষের মনে ভয় জাগিয়ে তোলে। ফলে নতুন এই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
যদিও এখনো ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম হয়নি। তবে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে ৭ মে একই অঞ্চলে একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে। তারপর সেটি ৮মে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেই গভীর নিম্নচাপ শক্তি সংগ্রহ করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এবং উত্তর দিকে কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হবে। এই গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেই এর নাম দেওয়া হবে ‘মোখা’।
‘মোখা’র জন্মের আগেই তার আছড়ে পড়া নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে জনমানসে। ইয়াস, ফণী, আমপানের মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে যে ধ্বংসলীলা চলেছিল, সেই ক্ষত এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। ফের ‘মোখা’র চোখরাঙানিতে রীতিমতো সন্ত্রস্ত আগের ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত রাজ্য এবং অঞ্চলগুলো। কোন রাজ্যে ‘মোখা’ আছড়ে পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু কোথায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তারই ভিত্তিতে চারটি রাজ্যকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে মৌসম ভবন।
সেই চারটি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে তামিলনাড়ু। মৌসম ভবন জানিয়েছে, চেন্নাই এবং তার আশপাশে বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। তার জেরে প্রবল বৃষ্টিও হতে পারে চেন্নাইয়ে। তাই এই রাজ্যকে সতর্ক থাকতে বলেছে মৌসম ভবন। এর পরই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। এই রাজ্যের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। ‘মোখা’আছড়ে না পড়লেও তার জেরে রাজ্যের একাংশে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কোনো স্থানে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিও হতে পারে।
ওড়িশাকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। গত ৪ বছরে চারটি ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করতে হয়েছে ওড়িশাকে। এ বারও সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রাজ্য প্রশাসন। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং ওড়িশা ছাড়াও অন্য যে রাজ্যে ‘মোখা’আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেটি হল পশ্চিমবঙ্গ। এই রাজ্যকেও সতর্ক করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের ৮-১১ মে পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার