আর ‘লর্ড’ নন শান্ত!!

এই শান্ত এখন যেন অশান্ত! এমন কথা তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে আগেও। তবে সেগুলো বেশিরভাগই ছিল ঘরোয়া ক্রিকেট আর বয়সভিত্তিক দলের খবর।

জাতীয় দলে শান্ত অনেকদিন ছিলেন কেবল নিজের ছায়া হয়ে! এর আগে একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে সুযোগ দিয়েই গেছে। একটা সময় টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীদের বড় একটা অংশের চক্ষুশূলে পরিণত হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শান্ত কেন দলে? এই প্রশ্ন যে কত জায়গা থেকে কতবার এসেছে, তার হিসাব নেই।

ঘরোয়া লিগের সবসময়কার পারফর্মার জাতীয় দলে এসে খেই হারিয়ে ফেলায় শান্তকে নিয়ে সমালোচনাও হয় প্রচুর। ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেট সমর্থকেরা রীতিমতো হাস্যরস করতেন শান্তকে নিয়ে। যেটা এক সময় লিটন দাসকে নিয়েও হয়েছিল। পরে লিটনও নিজেকে বদলে ফিরেছেন স্বরূপে। বাকি ছিলেন শান্ত। যাঁকে নিয়ে ট্রলের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। তা-ই নয়, শান্তকে নেটিজেনরা মজা করে ‘লর্ড শান্ত’ বলেও ডাকতেন!

তবে সেই শান্ত যেন নিজেকে পরিবর্তন করতে বেশ সময় নেননি। তিরস্কার আর কটুকথার জবাব দিতে শিখে গেছেন পারফরম্যান্স দিয়েই। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দিতে শান্তর ছিল অন্যতম অবদান। ৪৭ বলে খেলেছেন ৪৬ রানের ধৈর্যশীল এক ইনিংস। তিনে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই তবে মাঠ ছেড়েছেন আজ।

এছাড়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৩০ বলে ৫১ রানের ঝোড়ো ইনিংস। তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে অনেক কথা হলেও, শান্ত যেন মনে করিয়ে দিলেন প্রয়োজনের সময় তিনি ব্যাটিং তাণ্ডবও চালাতে জানেন। আজ আবার টিক উল্টো চিত্র। অন্য ব্যাটারার যখন আসা-যাওয়ার মধ্যে, শান্ত তখন নিজের উইকেট নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেননি। শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে, গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই শান্তর ব্যাটের সঙ্গে ছুটছে রান। ৩৬ গড়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৮০ রান করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত সংস্করণে শান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৫ ইনিংসে করেছেন ৫১৬ রান। শান্তর পারফরম্যান্স কি তা-ই বলছে না তিনি আর ‘লর্ড’ নন—তিনি একজন লড়াকু।