মাটির ঘরে হাদিসুর, পাশেই উঠছে স্বপ্নের ঘর!

আদরের হাদিসুরকে ছাড়া কোনো কিছুই কল্পনা করতে পারেন না তারা, তাকে ঘিরেই ছিল পবিবারের সব স্বপ্ন…
প্রিয় ছেলেকে স্ম;রণ করতে গিয়ে নি;হ;ত হাদি;সু;রের মা-বাবা দুজনই বাকরুদ্ধ হয়ে যান। হা;দিসু;রের কথা তু;লতেই মনে হয়, তাদের বেদনা যেন বেড়ে যায় ব;হুগু;ণ।

আদরের হা;দিসুর;কে ছাড়া কোনো কিছুই কল্পনা করতে পারেন না তারা। তাকে ঘিরেই ছিল পবিবারের সব স্ব;প্ন।

বাংলার স;মৃ;দ্ধি জাহাজের থার্ড ই;ঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের পরিবারের বিষাদের ছায়া এখনো যায়নি। এরই মধ্যে কে;টে গেছে হা;দিসুর নি;হ;ত হওয়ার এক বছর। তবুও এগিয়ে চলছে হাদীসুরের সেই স্ব;প্নের কুটির নির্মাণ।

গত বছর ২৪ ফ্রেরুয়ারি থেকে ই;উ;ক্রেনে যু;দ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির ২৯ জন নাবিক সেখানেই নোঙর করা অবস্থায় আ;ট;কা পড়েন।

পরে ওই বছরই ২ মার্চ ই;উ;ক্রেনে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে জাহাজে র;কেট হা;ম;লা হয়। এতে জাহা;জটিতে আ;গুন ধরে যায়। এ হা;ম;লায় গো;লার আ;ঘাতে নি;হ;ত; হ;ন হাদিসুর রহমান।

হাদিসুরের বাড়ি বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলা গ্রামে। বৃ;দ্ধ বাবা-মা, বড় এক বোন ও ছোট দুই ভা;ইসহ অনেক আ;ত্মীয়-স্বজন রয়ে;ছেন সেখানে।

ই;উ;ক্রেনের অল;ভিয়া বন্দরে ক্ষে;পণা;স্ত্রের আঘাতে ক্ষ;তিগ্র;স্ত ‘এম ভি বাংলার সমৃ;দ্ধি’ জাহাজে নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের পরিবারকে পাঁচ লাখ ডলার (প্রায় পাঁচ কোটি টাকা) ক্ষ;তিপূ;রণ দিয়েছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)।

গত বছরের ২৫ মে বিএসসির পরিচালনা প;র্ষদের ৩১২তম বৈঠকে সি;দ্ধান্ত মোতাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ শি;পিং করপোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী হা;দিসুরের বাবা অবসর;প্রাপ্ত শি;ক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের হা;তে ক্ষ;তিপূ;রণের চেক তু;লে দেন।

গত বছরের ডিসেম্বরেই একটি বাড়ি নি;র্মাণ ও বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসুরের। কিন্তু তার ফেরা হয়নি। তবে তার অন্তত একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে, স্বপ্নের কুটিরের নির্মাণকাজ চলছে।

হাদিসুর হারিয়ে যাওয়ার এক বছর হলেও তার পরিবার এখনো শো;ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। হাদিসুরের মা রাশিদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মা তোমার মুখটার ছবি দেখতে ভালো লাগে- এ কথা কেউ আর এখন শোনায় না। হাদিস আজ মাটির ভেতরে শুয়ে রয়েছে। অনেক আশাই তো ছিল তার। আমারে আজ শো;কের সাগরে ভাসিয়ে গেছে। হা;দিসুর মা;রা যাওয়ার পর অনেকে খোঁজ নিলেও এখন তার অনেকেই তাদের পাশে নেই।’

প্রকৌশলী হাদিসুরের বাবা অবস;রপ্রাপ্ত শিক্ষ;ক মো. আব্দুর রাজ্জাক। শোক আর চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হাদিসুর ছাড়া আজ আমাদের আ;শপা;শে কেউ নেই।’

হাদিসুর ছাড়া পরিবারের স্বজনরা যেমন শো;কাহ;ত, তেমনি প্রতিবেশী ও স্কুল-কলেজজীবনের সহপাঠীরাও শো;ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। হাদিসুরের সহপাঠী লিটন কুমার ঢালী বলেন, হাদিস বাড়িতে এলে আমাদের সঙ্গে দেখা করত। কুশলবিনিময় করত এবং খোঁজখবর নিত।

হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, গত বছরও ভাই ছিল। আজ ভাই নাই, বুকটা ফে;টে যায়। ইতোমধ্যে ভাইয়ের স্ব;প্নের বাড়ি তৈ;রির কাজ এগিয়ে চলছে।

গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বাড়িতে এসে বৃ;দ্ধ পিতা-মাতাকে স্বপ্নের কু;টির উপহা;র আর বিয়ে করে ঘরে বউ আনার কথা ছিল। একটা স্বপ্ন ঠিকই পূরণ হতে চলেছে। আমাদের মাঝে নেই শুধু প্রিয় ভাই। নতুন ঘরে ঠিকই যাচ্ছি। নেই কোনো আনন্দ।