খুলনার সেই মা রহিমা বেগমের অপহরণের নাটকের পর সন্তান মরিয়ম মান্নানের নানা কর্মকাণ্ড দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। সে সময় মরিয়ম মান্নান তার মা হারানোর আর্তনাদ, পোশাক দেখে মায়ের মরদেহ শনাক্তসহ নানা ছলচাতুরির নাটক করেছিলেন। পরবর্তীতে তার মাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।






পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) এরই মধ্যে ঐ মামলার তদন্ত শেষ করেছে। পিবিআই জানায়, মরিয়ম মান্নানের মাকে কেউ অপহরণ করেনি। বরং পরিকল্পিতভাবে তিনি আত্মগোপনে গিয়েছিলেন। আর এই পরিকল্পনার হোতা ছিলেন মরিয়ম মান্নান নিজেই।
পিবিআই আরো জানায়, ঘটনার দিন মাকে আত্মগোপনে যাওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে টাকাও পাঠিয়েছিলেন মরিয়ম, যা তাদের তদন্তে ওঠে এসেছে।






সে সময় রহিমা বেগমের পরিবার অভিযোগ করেছিলেন, খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন।
পিবিআই সূত্র আরো জানায়, রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার ২৫ দিন আগে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় মেয়ে মরিয়ম মান্নানের বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বসেই তারা এই নাটক সাজিয়েছিলেন। ২৭ আগস্ট বিকেলে মরিয়ম মান্নান ঢাকা থেকে বিকাশের মাধ্যমে খুলনায় মাকে এক হাজার টাকা পাঠান। তার মা সেখান থেকে ৯৮০ টাকা ক্যাশ-আউট করেন। রাতে আত্মগোপনে যান তিনি। বিকাশের অফিশিয়াল তথ্য তদন্তের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।






গত বছর ২৭ আগস্ট রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। পরে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী আক্তার। ঐ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফের নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের সবাইকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তারা কিছুদিন কারাগারেও ছিলেন।
পিবিআই জানায়, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মরিয়ম মান্নানদের জমিসংক্রান্ত ঝামেলা ছিল। এ নিয়ে রহিমা বেগম আদালতে মামলা করেছিলেন। ঐ মামলায় প্রতিবেশীরাই জিতে যাচ্ছিলেন। রহিমার জমির অংশ তার মেয়েরা লিখে নিয়েছিলেন। তাই প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে এই চক্রান্ত করেছিলেন তারা।






এদিকে খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা মামলাটির তদন্ত শেষ করেছি। পরে পিবিআই সদর দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর রিপোর্ট আদালতে জমা দেয়া হবে।