পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি অ্যাম্বুলেন্স পথে এক ইজিবাইকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক নিহত হন। একই ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এক সন্তানসম্ভবা নারী।






গত ২৬ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঐদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) সামনের এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত ইজিবাইক চালকের নাম আব্দুল কুদ্দুস। তিনি পটুয়াখালীর কাউখালী উপজেলার কোনাহোড়া এলাকার আব্দুল মজিদ শিকদারের ছেলে। সাভারের কলমা এলাকায় ভাড়া থেকে ইজিবাইক চালাতেন তিনি।






সাভার হাইওয়ে থানার এসআই এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, সাভার থানার মামলা নম্বর ৭৭। আমরা অজ্ঞাতনামা সেই গাড়িটি শনাক্তের জন্য সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্য নিয়েছি। সে অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ছিল। ঐ অনুষ্ঠানের জন্যই মদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্সে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ছিলেন অ্যাম্বুলেন্সে চালকের সঙ্গে।






অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনাটি এতদিন চাপা রাখার চেষ্টা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শামছুর রহমান বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালানোর সময় চালক রিপন হাওলাদার জানতে পারেন, গাড়িতে মদ আছে। এতে তিনি ঘাবড়ে যান। রিপন বলেছেন, এ কারণেই সেদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত চলমান থাকায় রিপনকে ছুটিতে রাখা হয়েছে। ঘটনার পরই মদ আনতে যাওয়া দুই ছাত্র পালিয়ে যায়। ঐদিন রাতেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।






জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় অ্যাম্বুলেন্সটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম ব্যাচের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত চৌধুরী পিয়াস এবং একই বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব ইমন। তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক বলেন, সাভার হাইওয়ে থানা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা করেছে। অ্যাম্বুলেন্সটি ইজিবাইকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ছিটকে পড়ে চালক কুদ্দুস ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় আনে পুলিশ। পাশাপাশি এ দুর্ঘটনায় আহত একজন গর্ভবতী নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার আসামি হচ্ছে একজন অজ্ঞাতনামা গাড়ির চালক। আমরা সেটি শনাক্ত করেছি। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে আমরা সেটি প্রকাশ করব না। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাহায্য নিচ্ছি।






এদিকে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাম্বুলেন্সটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসে রাখা হয়েছে। যার লাইসেন্স নম্বর ঢাকা মেট্রো ছ ৭১-৪৫৪৫।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পুলিশ আমাদের জানিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স নাকি চিহ্নিত হয়েছে। এখন আইন অনুসারে যা হওয়া দরকার, সেটাই হবে।